Ajker Patrika

৮ পুকুর বহিরাগতের দখলে

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ১২ অক্টোবর ২০২১, ০৯: ২৭
৮ পুকুর বহিরাগতের দখলে

সরকারি বিএম কলেজ ক্যাম্পাসের ৮টি পুকুর এক সময় ছাত্রাবাসের শিক্ষার্থীদের মাছের জোগান দিত। কিন্তু সম্প্রতি পুকুরগুলো দখল চলে গেছে বহিরাগতের। নেটের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। এতে একদিকে যেমন পুকুর কলেজের শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করতে পারছেন না, তেমনি এর সৌন্দর্যহানির ঘটছে। এতে বড় ধরনের রাজস্ব হারাচ্ছে বিএম কলেজ।

কলেজের একাধিক বিভাগীয় প্রধান জানান, গত জুনে একাডেমিক কাউন্সিলের এক সভায় পুকুরগুলো নিয়মতান্ত্রিক উপায় ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ জন্য অধ্যাপক মো. শাহ আলম হাওলাদারকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি করে হয়। সেই কমিটি আলোর মুখ দেখেনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের একাধিক সূত্র জানায় এ পুকুরগুলো মহানগর আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল দখল করে নিয়েছেন। তার লোকজন দিয়ে ৮টি পুকুরেই বেড়া দিয়েছে নেটের।

এ ব্যাপারে নিরব হোসেন টুটুল বলেন, ‘মাছ চাষের জন্য পুকুরগুলো আমি নিয়েছি।’ কলেজের ছাত্রদের নেট থাকায় পুকুর ব্যবহার করতে পারার অভিযোগের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘নেট অপসারণের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

পুকুরগুলোর দেখভালের দায়িত্বে থাকা ছাত্রলীগ কর্মী কবির হোসেন বলেন, তিনি কলেজে এক বছরেও ঢোকেননি। নেটের বেড়াও দেননি।

সরেজমিনে কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ, অশ্বিনী কুমার শিশু নিকেতন, বিএনসিসি ভবন, জীবনানন্দ হল, ফ্লাইট সার্জেন্ট ফজলুল হক হলের সামনের পাঁচটি পুকুর এবং অশ্বিনী কুমার ছাত্র বাসের সামনের ৩টি পুকুর নেটের বেড়া দিয়ে আটকে রাখতে দেখা গেছে।

ছাত্রমৈত্রী বিএম কলেজ শাখার সভাপতি আরাফাত হোসেন শাওন বলেন, তারা কলেজ কর্তৃপক্ষকে পুকুরগুলো বহিরাগতদের দখল মুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন।

বিএম কলেজের পুকুর ইজারা সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক এবং কলেজের অশ্বিনী কুমার ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক মো. শাহ আলম হাওলাদার বলেন, পুকুরের দায়িত্ব অধ্যক্ষের হাতে। তাঁর দায়িত্বকালীন এ পুকুরের একটি মাছ কোনো ছাত্রের ভাগ্যে জোটেনি।

তবে কমিটির সদস্য সহকারী অধ্যাপক মো. মনিরুল আহসান হিরু বলেন, কলেজের পুকুরগুলো নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ইজারা দেওয়ার জন্য যে কমিটি করা হয়েছিল তার একটা চিঠি পেয়েছিলেন। সভা না হওয়ায় সে প্রক্রিয়া এগোয়নি।

কলেজের কবি জীবনানন্দ দাশ ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক প্রভাষক বিলাশ মণ্ডল বলেন, পুকুরের দায়িত্ব যাকে দিয়েছে তিনিই হয়তো মাছ চাষের জন্য নেটের বেড়ে দিয়েছেন।

বিএম কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ ও সচেতন নাগরিক কমিটির জেলা সভাপতি অধ্যাপক শাহ শাজেদা বলেন, পুরো বিএম কলেজ এখন একটি মাছের ঘের মনে হচ্ছে।

বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, পুকুরগুলো ঘিরে যে নেটের বেড়া দেওয়া হয়েছে তা সরিয়ে ফেলতে বলা হবে। কে বা কারা বেড়া দিয়েছে তা জানা নেই। পুকুরগুলো ইজারা দেওয়া হয়েছে কিনা কিংবা এগুলো থেকে রাজস্ব আয় হচ্ছে কিনা এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, এখনই এসব বিষয় কিছু বলতে পারবেন না। কলেজের পুকুর কেন ছাত্ররা ব্যবহার করতে পারছে না এ প্রশ্নেরও জবাব দেননি অধ্যক্ষ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ