Ajker Patrika

নাব্যসংকট, চলাচল ব্যাহত

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ০৭ অক্টোবর ২০২১, ০৯: ০৯
নাব্যসংকট, চলাচল ব্যাহত

বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের ৩১টি নদীপথের বিভিন্ন স্থানে নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। কোনো কোনো বন্দর এবং চ্যানেলে এখনই নৌযান চলাচল ব্যাহত হয়ে পড়েছে বলে দাবি চালকদের। এ জন্য তারা অপরিকল্পিত ড্রেজিং ব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন। বিআইডব্লিউটিএ ইতিমধ্যে নদীগুলো সার্ভে (জরিপ) করেছে। এ বছর ৩০টি স্থানে প্রায় ২১ লাখ ঘনমিটার মাটি খনন করার উদ্যোগও নিয়েছে।

বরিশাল নৌবন্দরসহ স্থানগুলোয় আগামী দুই মাস এ খনন চলবে। গতকাল বুধবার বরিশাল নদীবন্দর সম্মেলন কক্ষে নৌযান চালকদের সঙ্গে এক সভায় বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান ভূঁইয়া এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, তাঁরা দক্ষিণের ১ হাজার ৪০০ নৌপথ উদ্ধার করার পরিকল্পনা নিয়েছেন।

বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের তথ্যমতে, এবার শুষ্ক মৌসুমের জন্য নদী খননের উদ্যোগ নেওয়া ৩০টি স্থানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে বরিশাল নৌবন্দর, পটুয়াখালী নৌবন্দর, কারখানা নদীবন্দর, আপেলকাঠী, কবাই, বরগুনার খাগদন নদী, আমতলী ফেরিঘাট, লাহারহাট-ভেদুরিয়া চ্যানেল, ইলিশা ঘাট, ভোলা খেয়াঘাট, লালমোহন, নাজিরপুর, রাঙ্গাবালী, শ্রীপুরের লালবাগ, কালাবদরের মুখে, হিজলা-মৌলভীরহাট, মিয়ার চর।

গতকাল বুধবার বরিশাল নৌবন্দরে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন বিআইডব্লিউটিএর নৌ সংরক্ষণ ও পরিচালনা বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক মো. আব্দুল মতিন সরকার।

সভায় বরিশাল-ঢাকা নৌপথের সুন্দরবন-১০ লঞ্চের মাস্টার মো. মজিবর রহমান বলেন, বরিশাল নৌবন্দরে ড্রেজিংয়ের সময় পন্টুন সরানো দরকার। তা নাহলে মাটি কেটে নদীতে ফেললে তা স্রোতে আবার পন্টুনের নিচেই চলে আসে।

যে কারণে প্রতিবছরই এমন নাব্য সংকট সৃষ্টি হয়। তিনি হিজলা-মৌলভীরহাট চ্যানেলে নাব্য সংকটের কথা তুলে ধরে বলেন, মিয়ার চরে গত বছর অপরিকল্পিত খনন করায় এবার সেখান থেকে নৌযান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। তিনি চরবাড়িয়ায় নদীর মাঝে বিদ্যুতের টাওয়ারে লঞ্চ চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হচ্ছে বলে জানান।

তবে বিআইডব্লিউটিএর বন্দর কর্মকর্তা মুস্তাফিজুর রহমান এ ক্ষেত্রে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, তিনি মিয়ারচরসহ বিভিন্ন স্পটের নদীর মাঝে গিয়ে দেখেছেন লঞ্চ চলাচলের মতো পর্যাপ্ত পানি রয়েছে।

অপরদিকে বিআইডব্লিউটিসির বরিশাল অঞ্চলের এজিএম সভায় বলেন, তাঁদের ফেরি চলাচলে লাহারহাট-ভেদুরিয়া রুটে নাব্য সংকট দেখা দেয় প্রতিবছর। এ ছাড়া ভোলার শ্রীপুরের লালবাগ, কালাবদরের মুখেও খনন দরকার।

এসব বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, শুষ্ক মৌসুম এলেই বরিশাল, ঢাকা, পটুয়াখালী রুটে নাব্য সংকট দেখা দেয়।

গত মঙ্গলবার পরিদর্শন করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে। আসন্ন শুষ্ক মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলে নদ-নদীর ৩০টি পয়েন্টে মোট ২১ লাখ ঘনমিটার পলি খনন করা হবে। চলতি মাসেই খনন কার্যক্রম শুরু হবে। এ অঞ্চলের ৩১টি নৌপথের ৩০টি স্থানে তাঁরা খননের উদ্যোগ নিয়েছেন। খনন কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য ১২টি ড্রেজার থাকবে দক্ষিণাঞ্চলে।

সরেজমিনে গতকাল বরিশাল নৌবন্দর ঘুরে দেখা গেছে, কীর্তনখোলা নদীর উত্তর প্রান্তে চর জেগে নদীর গতি পাল্টে গেছে। সেখানকার রসুলপুর বস্তিসংলগ্ন বিশাল অংশে চর জেগেছে। বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজার সেখানেই রাখা হয়েছে। এ ব্যপারে বিআইডব্লিউটিএর অতিরিক্ত পরিচালক মো. আব্দুল মতিন সরকার বলেন, নাব্য হারিয়ে প্রায় বিলুপ্ত হতে যাওয়া নদীপথগুলো খনন করে নতুন করে সারা দেশে ১০ হাজার কিলোমিটার নৌপথ সৃষ্টি করার পরিকল্পনা রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ