Ajker Patrika

গাজীপুরে হাসিনা–কাদেরসহ ১৩৯ জনের নামে হত্যা মামলা

গাজীপুর প্রতিনিধি
গাজীপুরে হাসিনা–কাদেরসহ ১৩৯ জনের নামে হত্যা মামলা

গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন চলাকালে নূর আলম (২২) নামে এক যুবক নিহতের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ১৩৫ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করা হয়েছে। মামলায় আরও ১০০–১৩০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। 

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) রাতে গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানায় নিহত নূর আলমের বাবা মো. আমির আলী বাদী হয়ে মামলাটি করেন। 

নূর আলমের বাড়ি কুড়িগ্রাম সদরের মোল্লাপাড়া মধ্য কুমরপুর এলাকায়। তিনি গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানার ১৮ নং ওয়ার্ডের তেলিপাড়া এলাকার ডাক্তার নাহিদের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ভাড়া থাকতেন। 

বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা ৫ মিনিটে মামলাটি রেকর্ড করা হয়েছে। 

মামলায় উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক মহিলা বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, রুমানা আলী টুসি, গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্ল্যাহ খান, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ, মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমানসহ প্রমুখ। 

বাদী মামলার এজাহারে অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৬ জনের নির্দেশ অনুযায়ী বন্দুক, পিস্তল, লাঠি, লোহার রড, রামদা, ছেনি, চাপাতি, কোবা দিয়ে বিভিন্ন ভাবে মারাত্মক দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বেআইনি জনতাবদ্ধে গত ২০ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে ঢাকা–ময়মনসিংহ সড়কের তেলিপাড়াস্থ হানিমুন রেস্টুরেন্টের সামনে রাস্তায় অবস্থানরত আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করা হয়। খোরশেদ আলম রশিদমহ (১৯) প্রায় ২৫–৩০ জন আন্দোলনকারীকে কুপিয়ে জখম করে। একপর্যায়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান সশরীরে উপস্থিত থেকে তাঁদের হুকুমে ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এজাহার নামীয় ও অজ্ঞাত আসামিরা ছাত্র–জনতাকে হত্যার উদ্দেশে গুলি ছুড়তে শুরু করে। গুলিতে বেলা সোয়া ১০টার দিকে নূর আলমের (২২) ডান চোখের ওপরের অংশ দিয়ে গুলি ঢুকে মাথার পেছন দিয়ে বের হয়ে যায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বরিশালে আ.লীগ ও জাপার ৯ নেতা-কর্মী কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশালে আ.লীগ ও জাপার ৯ নেতা-কর্মী কারাগারে

বরিশালে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির ৯ জন নেতা-কর্মীকে আজ রোববার (২ নভেম্বর) বিকেলে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এর মধ্যে গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার মামলায় জাতীয় পার্টির চারজন এবং হিজলা উপজেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় আওয়ামী লীগের পাঁচজন নেতা-কর্মী রয়েছেন।

একই দিন বরিশাল মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মহাসিনুল ইসলাম হাবুলের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক (ভারপ্রাপ্ত) ইসরাত জাহান এই আদেশ দিন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী কামরুল ইসলাম জানান, জেলহাজতে পাঠানো জাতীয় পার্টির চার নেতা-কর্মী হলেন—আক্তার রহমান সপ্রু, মো. জুম্মান, রফিকুল ইসলাম ও নজরুল ইসলাম।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ৩১ মে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর সদর রোড এলাকায় জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-মিছিল করে রাষ্ট্রবিরোধী স্লোগান দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ সময় গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীরা তাঁদের ‘রাষ্ট্রবিরোধী’ স্লোগান না দেওয়ার অনুরোধ জানালে উভয় পক্ষের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটে।

ওই ঘটনায় গণঅধিকার পরিষদের বরিশাল মহানগরের সহসভাপতি শফিকুল ইসলাম সাগর বাদী হয়ে দুই থেকে আড়াই শতাধিক ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় চার নেতাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে অপর এক মামলায় হিজলা উপজেলায় বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় হওয়া বিস্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেপ্তারের পর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা-কর্মীকে। তাঁরা হলেন—মো. শাহাবুদ্দিন পণ্ডিত, মোশারফ হোসেন তালুকদার, লিয়াকত কাজী, হুমায়ুন কবির ও ইলিয়াস মোল্লা। চলতি বছরের ২২ জুলাই হিজলা উপজেলা বিএনপি অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় করা মামলায় তাঁদের কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিয়ের দেড় মাসের মাথায় সড়কে ঝরল প্রবাসীর প্রাণ

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) সংবাদদাতা
নিহত নাজমুল হাসান। ছবি: সংগৃহীত
নিহত নাজমুল হাসান। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার দেবিদ্বারে কাভার্ড ভ্যানের চাকায় পিষ্ট হয়ে নাজমুল হাসান (২৮) নামের এক প্রবাসী যুবক নিহত হয়েছেন। আজ রোববার (২ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টায় উপজেলার বেগমাবাদ এলাকায় কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত নাজমুল উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের ছেলে।

নিহত যুবকের স্বজন, পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, আজ বেলা সাড়ে ৩টায় কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন নাজমুল। বেগমাবাদ এলাকায় এলে একটি পিকআপ ভ্যান তাঁর মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে চলন্ত একটি কাভার্ড ভ্যানের নিচে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।

নিহত যুবকের ফুফাতো ভাই ফারুক হোসেন জানান, নাজমুল হাসান কুয়েতে কাজ করেন। প্রায় তিন মাস আগে ছুটিতে দেশে ফেরেন। দেড় মাস আগে বিয়ে করেন তিনি। ১৫ দিন পর তাঁর বিদেশে চলে যাওয়ার কথা ছিল। আজ ময়নামতি ক্যান্টনমেন্ট বাজার থেকে একটি টি-শার্ট কিনে বাড়ি ফেরার পথে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান নাজমুল।

নাজমুলের বাবা নজরুল ইসলাম বুক চাপড়ে বলেন, ‘ছেলেকে বিয়ে করিয়ে খুব আনন্দে ছিলাম। আনন্দটা বেশি দিন টিকল না।’

এ বিষয়ে মীরপুর হাইওয়ে পুলিশের এসআই আনিসুর রহমান জানান, লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত কাভার্ড ভ্যান ও মোটরসাইকেল পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর সড়কে যানজট হয়। বিকেল সোয়া ৫টা থেকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

খুলনায় বিএনপি নেতার অফিসে বোমা হামলা ও গুলি, নিহত ১

খুলনা প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) আইটি গেটসংলগ্ন বিএনপির স্থানীয় কার্যালয়ে দুর্বৃত্তরা গুলি ও বোমা হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় এমদাদুল হক (৫৫) নামের এক বিএনপি কর্মী নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়েছেন যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য মামুন শেখ (৪৫)। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক।

আজ রোববার (২ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রাত ৯টার দিকে বিএনপি নেতা মামুন শেখ স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অফিসে বসে ছিলেন।

এ সময় দুর্বৃত্তরা হঠাৎ অফিসে থাকা মামুন শেখকে লক্ষ্য করে পরপর দুটি বোমা ও চার রাউন্ড গুলি ছুড়ে নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়।

প্রথম গুলি মিস হয়ে পাশে থাকা এমদাদুল হকের শরীরে বিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। এরপর সন্ত্রাসীরা আরও গুলি চালালে মামুন শেখ গুলিবিদ্ধ হন। তখন দলীয় নেতা-কর্মী ও স্বজনেরা গুরুতর আহত মামুনকে দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।

খানজাহান আলী থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান বলেন, ‘যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মামুন শেখকে দুর্বৃত্তরা গুলি করেছে। তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আমি ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে যাচ্ছি। একজন নিহত হওয়ার খবর পেয়েছি।’

যোগীপোল ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর শওকত হোসেন হিট্টু বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি ফুলবাড়ী গেটে ছিলাম। শুনেছি, আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনকে দুর্বৃত্তরা গুলি করেছে। তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বগুড়ায় মুগডালে ক্ষতিকর রং, ৪ দোকানিকে লাখ টাকা জরিমানা

বগুড়া প্রতিনিধি
বগুড়ায় ৪ দোকানিকে জরিমানা। ছবি: আজকের পত্রিকা
বগুড়ায় ৪ দোকানিকে জরিমানা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুগডালে ক্ষতিকর রঙের উপস্থিতি পাওয়ায় বগুড়ায় চারটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ রোববার শহরের ডালপট্টিতে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের যৌথ অভিযানে এই জরিমানা করা হয়।

অভিযানে শহরের ডালপট্টি এলাকার একাধিক দোকানে মুগডালে ক্ষতিকারক রং আছে কি না, তা পরীক্ষা করা হয়। অভিযানে চারটি দোকানের মুগডালে ক্ষতিকারক রঙের উপস্থিতি পাওয়া যায়।

যদিও দোকানিরা বলছেন, তাঁরা প্রত্যেকে এই ডালগুলো রাজশাহীর বানেশ্বর থেকে কিনেছেন। এগুলোর মধ্যে রংমিশ্রিত থাকে তা আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলোই ভালো বলতে পারবে। তাঁরা পাইকারি এনে সেভাবেই আবার বিক্রি করেন।

এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বগুড়ার সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, ‘আজ রোববার আকস্মিক অভিযানে সব ব্যবসায়ীদের কঠোরভাবে সতর্ক করে দেওয়ার পাশাপাশি দুই দোকানকে ৩০ হাজার করে এবং আরও দুই দোকানকে ২০ হাজার করে মোট ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

পাশাপাশি আজ সন্ধ্যার মধ্যে যাঁদের কাছে রংমিশ্রিত ডাল রয়েছে, সেসব বস্তা নিজ নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে ব্যবসায়ী নেতারা ডালের বস্তাগুলো একত্র করে সংশ্লিষ্ট আমদানিকারককে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।’

জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো. রাসেল বলেন, মুগডালে যে রঙের উপস্থিতি তাঁরা অভিযানে পেয়েছেন, তা মানবস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যেসব অসাধু ব্যবসায়ীরা ভোজ্যপণ্যে ভেজাল কিংবা ক্ষতিকারক এমন রং ব্যবহারের প্রচেষ্টা করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ পদক্ষেপ গ্রহণের হুঁশিয়ারি দেন তিনি। অভিযানে ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক ফজিলাতুন্নেছাসহ জেলা পুলিশের সদস্যরা সহযোগিতা করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত