Ajker Patrika

আওয়ামী লীগের লকডাউন ঠেকাতে উত্তরার রাজপথে বিএনপি ও বৈষম্যবিরোধীরা

উত্তরা-বিমানবন্দর (ঢাকা) প্রতিনিধি 
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মী সন্দেহে একজনকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মী সন্দেহে একজনকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রাজধানীর উত্তরায় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লকডাউনে দেখা মেলেনি দলটির নেতা-কর্মীদের। তবে রাজপথ দখল করে অবস্থান নিয়েছে বিএনপির নেতা-কর্মী, এনসিপির নেতা-কর্মী এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। তবে কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া উত্তরায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারি।

সরেজমিনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের উত্তরার বিভিন্ন অংশে বুধবার (১২ নভেম্বর) রাত থেকে বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিকেল পর্যন্ত এমন দৃশ্য দেখা যায়। রাত থেকে দুপুর পর্যন্ত মহাসড়কের যানবাহনের তেমন চাপ ছিল না। কিন্তু দুপুরের পর থেকে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লকডাউনের দিন উত্তরার সড়ক ছিল অনেকটাই ফাঁকা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লকডাউনের দিন উত্তরার সড়ক ছিল অনেকটাই ফাঁকা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এদিকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধ করতে উত্তরার আব্দুল্লাহপুর, বিএনএস সেন্টার, আজমপুর, বিমানবন্দর এলাকায় ছিল বিএনপি, জামায়াত ও শিবিরের নেতা-কর্মীদের অবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল।

এ ছাড়া বুধবার রাত থেকে উত্তরার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মেট্রোরেল স্টেশন এলাকায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার টহল ও নজরদারি ছিল চোখে পড়ার মতো।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মেট্রোরেল স্টেশন এলাকায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দ সংস্থার টহল ও নজরদারি ছিল চোখে পড়ার মতো। ছবি: আজকের পত্রিকা
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মেট্রোরেল স্টেশন এলাকায় সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দ সংস্থার টহল ও নজরদারি ছিল চোখে পড়ার মতো। ছবি: আজকের পত্রিকা

তা ছাড়া ঢাকার প্রবেশপথ উত্তরার আব্দুল্লাহপুর, তুরাগের ধউর, উত্তরখানের তেরোমুখ ব্রিজ, সাভারের বিরুলিয়া ব্রিজসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া চেকপোস্ট। এদিকে মহাসড়কে যান চলাচল কম থাকায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত যাত্রীদের ভোগান্তি লক্ষ করা যায়।

খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, বুধবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে উত্তরার কামারপাড়া এলাকায় একটানা ৪-৫টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে এতে কেউ আহতের খবর পাওয়া যায়নি। যদিও পুলিশ এগুলোকে আশতবাজি বলে দাবি করেছে।

তুরাগের দিয়াবাড়ি এলাকায় বুধবার রাতে চেকপোস্টে পুলিশের সিগন্যাল অমান্য করে একটি নাম্বার প্লেটবিহীন সাদা স্কুটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে দুই যুবক। পরে তাদের ধাওয়া করে আব্দুল্লাহপুর থেকে আটক করে তুরাগ থানা পুলিশ।

এ সময় তুরাগ থানার এএসআই আব্দুর রহিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা স্কুটিটি চেকপোস্টে সিগন্যাল দিয়েছিলাম। তারা অমান্য করে চলে যায়। পরে কিছুটা সামনে গিয়ে তাদের হাতে ইশারা করে থামাতে বললে, তারা তাদের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। পরে জনগণের সহযোগিতায় ধাওয়া করে আব্দুল্লাহপুর থেকে আটক করা হয়।’

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লকডাউনের দিন উত্তরার সড়ক ছিল অনেকটাই ফাঁকা। ছবি: আজকের পত্রিকা
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লকডাউনের দিন উত্তরার সড়ক ছিল অনেকটাই ফাঁকা। ছবি: আজকের পত্রিকা

এএসআই আব্দুর রহিম বলেন, ‘আটক দুজনের গলায় প্রেস লেখা ফিতা ছিল। তারা সাংবাদিকতার পরিচয় ব্যবহার করে অপরাধ কর্মকাণ্ডে লিপ্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের যাচাই-বাছাই শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে উত্তরার মুগ্ধ মঞ্চ এলাকায় সন্দেহজনক একজনকে ছাত্রলীগের নেতা দাবি করে গণধোলাই দেয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। পরে তাকে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আটক ওই যুবকের পরিচয় জানা যায়নি।

বিমানবন্দর এলাকায় নিরাপত্তা টহলে থাকা উত্তরা আর্মি ক্যাম্পের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মেজর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কেউ যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে না পারে, সে জন্য আমাদের একাধিক টিম পুরো এলাকায় টহল দিচ্ছে। সেই সঙ্গে সন্দেহভাজন ব্যক্তি ও গাড়িকে তল্লাশির আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।’

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘গত ১৭ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ দেশের হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করল, গুম করল, অথচ তাদের বিচার হবে না, তা তো হতে পারে না। যারা অন্যায় করেছে, তাদের বিচার দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী হবে—এটাই স্বাভাবিক।’

জাহাঙ্গীর হোসেন আরও বলেন, ‘আজ শেখ হাসিনাসহ তাঁদের দোসরদের বিচারের রায়ের দিন ধার্য হওয়ার কথা। তাই তারা লকডাউন দিয়েছ। কিন্তু তাদের লকডাউন তো দেশের মানুষ মানে না।’

দেশের জনগণের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে এস এম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘দেশের অরাজক পরিবেশ রোধে যেখানে আওয়ামী লীগের লোকজন পাওয়া যাবে, তাদের পুলিশের হাতে তুলে দেবেন। প্রয়োজনীয় সহযোগিতার জন্য আমাদের বলবেন। কিন্তু কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না।’

অপর দিকে ডিএমপির উত্তরা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. মহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নাশকতা ঠেকাতে আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছি। আমাদের চেকপোস্ট, টহল ও গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। আমাদের ছয়টি থানার সব ফোর্স, অফিসার নিয়ে আমরা মাঠে আছি।’

ডিসি মহিদুল বলেন, ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের কেউ কোনো অপ্রীতির ঘটনা ঘটাতে পারেনি। কেউ কোনো ঘটনা ঘটিয়ে যাতে চলে যেতে না পারে, সে জন্য আমরা সজাগ রয়েছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

২৬ টুকরা আশরাফুলের ফোন ধরতেন মালয়েশিয়াফেরত বন্ধু জরেজ, বলতেন ‘ব্যস্ত আছে’

হামজা থাকলে দ্বিতীয় গোল পাওয়া কঠিন হতো, বলছেন নেপাল কোচ

শতবার অনুশীলনের পরও কেন শেষ মুহূর্তে গোল হজম করছে বাংলাদেশ

জুলাই সনদ স্বাক্ষরের বিষয়টি এখনো বিবেচনাধীন: সারোয়ার তুষার

নিজ্জার হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পর ভারতের দিকে মুখ তুলে চাইল কানাডা

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ